করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষায় ভিটামিন ডি কাজ করে কি না, এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্সি, পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড এবং দি সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি কমিটি অন নিউট্রিশনের যৌথ প্যানেল জানিয়েছে, এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
তবে তাদের প্রত্যেকে এ শীতে হাড় এবং পেশি সবল রাখতে পরিপূরক হিসেবে প্রতিদিন ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ছেন। যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে দুর্বলদের জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে ভিটামিন ডি।
ভিটামিন ডি এবং করোনার মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। স্পল্প পরিসরে গবেষণার পর তারা পরামর্শ দিয়েছেন, ভিটামিন ডি সম্ভবত শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগের ক্ষেত্রে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মানবদেহে ভূমিকা রাখতে পারে।
যদিও তারা বলছেন, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় বা করোনা সংক্রমণরোধে ভিটামিন ডি ব্যবহারে পরামর্শ দেওয়ার মতো যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য ব্যাপকভাবে আরও বিস্তৃত পরিসরে ট্রায়াল পরিচালান করতে হবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্সির সেন্টার ফর গাইডলাইন্সের পরিচালক ডা. পল ক্রিসপ বলেন, যৌথ প্যানেলের গবেষণা প্রতিবেদন আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। নতুন কোনো তথ্য পাওয়া গেলে, সেগুলো জনসাধারণের জন্য জরুরি মনে হলে, আমরা তা জানিয়ে দেব।
লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সংক্রমণ এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাবিষয়ক ক্লিনিক্যাল প্রফেসর অ্যাড্রিয়ান মার্টিনিউ বলেন, সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংকটের তীব্রতা হ্রাসে ভিটামিনের ভূমিকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। আশা করি, ভিটামিন করোনা ইস্যুতে কতটা কার্যকর তার একটা জবাব আমরা পেতে যাচ্ছি।
‘যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ’
এ শীতে ভিটামিন ডি গ্রহণ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বহু মানুষ এখন করোনা থেকে বাঁচতে ঘরে থাকছে, আইসোলেশনে আছে। তার অর্থ তারা কিন্তু সূর্য্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি নেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছে না। বলেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য খাতসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
ভিটামিন ডিতে সুনির্দিষ্ট কিছু খাবার থাকে। যেমন তৈলাক্ত মাছ, কর্নফ্লেকস। বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালেও ভিটামিন ডির অভাবে অনেক মানুষ ঝুঁকিতে থাকে। তাদেরকে সবসময় ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের প্রধান পুষ্টিবিদ ডা. অ্যালিসন টেডস্টোন বলেন, যারা বিশেষ করে বয়স্ক, ঘরের বাইরে যেতে পারেন না, যাদের ত্বক শুষ্কসহ প্রত্যেকের জন্য আমাদের পরামর্শ প্রতিদিন ১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
‘চলতি বছর এ পরামর্শ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমানে অনেক মানুষ আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঘরে থাকছে।’ সূত্রঃ সময় নিউজ