ড. মোহাম্মদ আবু তাহের: অজানা স্থানকে জানা এবং নিত্য নতুন আবিষ্কার করার আকাংখা থেকেই পর্যটন শিল্পের বিকাশ হয়েছে। পর্যটন হচ্ছে পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ও শ্রমঘন শিল্প যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। পর্যটন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পদার্পন করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনের জন্য উন্নত বিশ্বের মত বাংলাদেশেও পর্যটন শিল্পের ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন। টেকসই উন্নয়নের জন্য ১৭ টি লক্ষ্যের মধ্যে ৩টি সরাসরি পর্যটন শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের পর্যটন নীতিমালার আলোকে পর্যটনকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে পদ্মা সেতু। পদ্মার দক্ষিণ পাড় দেশের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অঞ্চল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থল থেকে শুরু করে সূর্যোদয়- সূর্যাস্তের কুয়াকাটা, সমুদ্র বন্দর পায়রা, শেরে বাংলার জন্মভূমি এবং অপরূপ সৌন্দর্যের বিস্তীর্ণ উপকূল। সীমাহীন সম্ভাবনা আর ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর অসংখ্য স্থাপনা ধারণ করলেও কেবল প্রমত্তা পদ্মার কারণে সবকিছুই ছিল যেন আকাশ সমান দূরত্বে। বিশাল নদী পাড়ি দেয়ার ঝক্কী ঝামেলা এড়াতে অনেকেই আসতে চাইতেন না দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলায়। প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও যুগের পর যুগ পিছিয়ে থাকার সেই অবর্ণনীয় কষ্ট দূর হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে। এই সেতুকে ঘিরে এখন শিল্প বাণিজ্য ও পর্যটন খাতে নয়া বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে দেশের মানুষ। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। রাজধানী ঢাকা থেকে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের দূরত্ব প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। এক্ষেত্রে কুয়াকাটার দূরত্ব মাত্র ২৬৬ কিলোমিটার। এত কাছে থেকেও কুয়াকাটা দেশী বিদেশী পর্যটকদের মনযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি কেবল পদ্মা নদীর কারণে। কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এর চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেছেন “পদ্মা আমাদের আলাদা করে রেখেছিল রাজধানী তথা সারাদেশ থেকে। এই নদীর কারণে কুয়াকাটার বিনিয়োগের গতিও ছিল অত্যন্ত ধীর। সৈকত এলাকার শত শত হোটেল-মোটেল-রেস্তোরা গড়ে ওঠলেও ছিল না কোনো পেশাদারিত্ব। আমাদের সেই আক্ষেপের দিন ফুরোচ্ছে।” পদ্মা সেতুর কারণে ৫ থেকে ৬ ঘন্টায় রাজধানী ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পৌঁছানো যাবে। এরই মধ্যে বিপুল বিনিয়োগের আশা নিয়ে এখানে আসতে শুরু করেছে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং শিল্পগ্রুপগুলো। যোগাযোগের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে আগ্রহ থাকলেও অনেকেই এতদিন কুয়াকাটা যাওয়ার উদ্যোগ নেননি। এর প্রমাণ পাওয়া গেছে এবার ঈদুল আযহার ছুটিতে। ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটা সৈকতের চিত্র ছিল অন্যরকম। ফেরী বিহীন ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ভ্রমণের সুযোগে কুয়াকাটায় এবার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ঢল নেমেছিল। ঈদের পরের দিন কুয়াকাটা সৈকতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। করোনা পরিস্থিতিও তোয়াক্কা করেননি অনেক পর্যটক। ঈদের দিন বিকেল থেকে পরদিন সকালে কুয়াকাটা সৈকতে দেশী বিদেশী পর্যটকদের আনন্দ উচ্ছাস ছিল চোখে পড়ার মতো। পর্যটকদের চাপ সামলাতে ট্যুরিস্ট পুলিশকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। ঈদের সময় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র বন্দরও ছিল লোকে লোকারণ্য। আমাদের দেশে সারা বছরই বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজমান। এজন্যই হয়তো কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন “বাংলার রূপ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।”
কুয়াকাটার পাশাপাশি পটুয়াখালির কলাপাড়ায় স্থাপিত পায়রা সমুদ্র বন্দর নিয়েও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। বর্তমানে অপারেশনাল কার্যক্রমে থাকা পায়রা বন্দরে সমুদ্রগামী অনেক জাহাজ ভিড়ছে। এর মাধ্যমে মোটা অংকের রাজস্ব আয় করছে বন্দর। রাজধানী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় পায়রা বন্দরের দূরত্ব অনেক কম। সাগর পাড় থেকে পণ্য পৌঁছাতেও সময় লাগবে অনেক কম। এই বিবেচনায় পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পায়রা বন্দরের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে।
তাছাড়া পদ্মা সেতুর কারণে মোংলা থেকেও কম সময়ে আমদানী পণ্য পৌঁছে যাবে ঢাকায়, যে কারণে মোংলা বন্দরের গুরুত্বও অনেক বাড়বে এতে কোন সন্দেহ নেই। সবকিছু মিলে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি পদ্মা সেতু দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আকাশ সমান উচ্চতায়। সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার বলেছেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জিত না হলে কোনো মুক্তি আসাই সম্ভব নয়। উইনস্টন চার্চিল বলেছেন বিজয় চার ধরনের (১) সামরিক (২) রাজনৈতিক (৩) সামাজিক (৪) সাংস্কৃতিক। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা সামরিক ও রাজনৈতিক বিজয় অর্জন করেছি। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিজয় পুরোপুরি সমাপ্ত হয়নি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার অন্যতম মূল চেতনাই ছিল অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। পদ্মা সেতু আমাদের সেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের পথ সুগম করে দিয়েছে। ১৯৯৯ সালে পদ্মাসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের প্রথম মেয়াদের শেষের দিকে ৪ জুলাই ২০০১ তারিখে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পদ্মা সেতু শুধু দেশের দক্ষিণাঞ্চলই নয়, সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতীক।
সাউথ এশিয়ান কানেক্টিভিটি, পর্যটন, শিল্পায়ন, কৃষির অগ্রগতি, জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ সব ক্ষেত্রেই পদ্মা সেতুর অবদান অনস্বীকার্য। দেশের সর্বস্তরের মানুষ এ সেতুর মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন। বাংলাদেশের মানুষের আত্ম অহংকারের নাম পদ্মা সেতু। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে দেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা, দূরদর্শিতা, অদম্য সাহস ও প্রজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্নের পদ্মা সেতু পেয়েছে।
পদ্মার দক্ষিণ পাড়ে অনেক ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে আটঘর-কুড়িয়ানার পেয়ারা বাগান ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্র জলের রাজ্য। বরগুনার তালতলিতে শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত এবং টেংরা গিরি বনাঞ্চল, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে জাহাজ মায়া সৈকত, গলাচিপার কলাগাছিয়া সাগরপাড়, পিরোজপুরের মাঠবাড়িয়ার হরিণপালা এবং বরগুনার পাথরঘাটার হরিণঘাটা। পূর্বে অল্প সংখ্যক পর্যটক এসব স্থানে ঘুরতে আসত। পর্যটন কেন্দ্রিক স্থাপনাও তেমন একটা গড়ে ওঠেনি। এগুলোর পিছিয়ে থাকার প্রধান কারণ ছিল পদ্মা নদী। ভোলার মনপুরা-চর ফ্যাশন থেকে পটুয়াখালীর গলাচিপা বাঁশখালী হয়ে কুয়াকাটা এবং বরগুনার পাথরঘাটা-তালতলা পর্যন্ত পুরো উপকূলীয় এলাকা জুড়ে একটি এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করার চিন্তা ভাবনা চলছে বলে জানা গেছে। সবকিছু মিলিয়ে বিশাল এই সম্ভাবনার পালে নতুন হাওয়া বয়ে আনবে পদ্মা সেতু একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের আগমন ঘটবে এবং নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্রও গড়ে ওঠবে, এর মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষেরও কর্মসংস্থান হবে। পদ্মা সেতুর কারণে পর্যটন সম্ভাবনা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করলে বার বার কবি সুকান্তের পংক্তিগুলো উচ্চারণ করতে ইচ্ছে করে- “সাবাশ বাংলাদেশ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়।” অর্থনীতিবিদদের মতে ঢাকা থেকে মাওয়া-জাজিরা-ভাঙ্গা-পায়রা-কুয়াকাটা-যশোর-খুলনা-মোংলা পর্যন্ত সুবিস্তৃত একটি ইকোনমিক করিডোর দেশের অর্থনীতির দ্বিতীয় সর্বোত্তম লাইফ লাইনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে মোটেও সময় লাগবে না। ঢাকামুখী অভিবাসন স্্েরাত নিরসনেও এ করিডোর তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রাচীনকাল থেকেই বিদেশীরা এ শ্যামল ভূখন্ডের প্রশংসা করেছেন। বিশ্ব পর্যটন সংস্থার হিসেব অনুযায়ী পৃথিবীতে ৭৫০ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে পর্যটকের সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এই ১০০ কোটি পর্যটকের মধ্যে ৫০ শতাংশ যাচ্ছে ইউরোপে আর ২০ শতাংশ যাচ্ছে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। বাকীরা অন্য মহাদেশে যাতায়াত করছে। পর্যটন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বিশ্বের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষকে কর্মসংস্থান সম্পৃক্ত করেছে। পর্যটন ১৯৯৯ সালে বিশ্বে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এরপর অনেক বছর অতিবাহিত হয়েছে। অনেক সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ ভারতের থেকে এগিয়ে থাকলেও এ শিল্পে আমাদের দেশ ভারত, মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো পর্যটন শিল্প। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পর্যটন খাতের বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করে তোলার উদ্যোগ গ্রহন করেছে। ২০৪০ সালের মধ্যে পর্যটন থেকে বার্ষিক ৯০০ কোটি রিয়াল আয়ের লক্ষ্য ওমানের। করোনা মহামারীর আগে ২০১৯ সালে এ খাতে আয় ছিল ১২০ কোটি ডলার। বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে আইনি কাঠামোর আধুনিকায়ন, পর্যটন আইন ও প্রবিধানগুলোর হালনাগাদ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের নানামুখী উদ্যোগ আয়োজনের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়ন ঘটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করি। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে পর্যটন শিল্পের যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পর্যটন শিল্পে সহায়তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেড় হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এসএমই ঋণ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশী বিদেশী পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ রয়েছে। পর্যটন শিল্পের ক্ষতি চিহ্নিতকরণ ও সামাজিক উপায় নির্ধারণের জন্য ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন, করোনাকালীন পর্যটন শিল্প পুনরায় চালুকরণের জন্য অনুসরণীয় নির্দেশনা প্রস্তুত ও বিতরণ, পর্যটন শিল্পের অংশীজনের প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।
পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য এবং পর্যটকদের আস্থা বাড়ানোর জন্য হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরা মালিকদের পর্যটক নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব জনবল থাকতে হবে। খাবারের গুণগত মান ঠিক রাখতে হবে, খাবারের মান ও দামের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, বেশি বেশি পর্যটন মেলার আয়োজন করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পর্যটন অফিস স্থাপন করতে হবে। পর্যটন এলাকায় পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিটি হোটেলে কক্ষসংখ্যা, মূল্য তালিকা ও খালি কক্ষের সংখ্যা সম্বলিত ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করতে হবে। হোটেল, মোটেল মালিক সমিতি ও প্রশাসনের সহায়তায় আবাসিক হোটেল কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি আবাসিক হোটেলে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। আশা জাগানিয়া খবর হলো সরকার বেশকিছু পর্যটনের গুরুত্বপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সরকারি বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান পর্যটনকে অর্থনৈতিক একটি কার্যকর খাত হিসেবে রূপান্তরের জন্য সচেষ্ট রয়েছেন। সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যটনের ওপর উচ্চশিক্ষা প্রদানেরও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় নিযুক্ত জাপান, ভারত, চীন, সৌদি আরব ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত পদ্মা সেতুর বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কুটনীতিবিদদের চোখে পদ্মা সেতু ‘গেম চেঞ্জার’। কুটনীতিবিদরা মনে করেন পদ্মা সেতু পর্যটন, আঞ্চলিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সুযোগ প্রসারিত করবে। নিঃসন্দেহে পদ্মা সেতু জাতীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে অবদান রাখবে।
লেখক-ড. মোহাম্মদ আবু তাহের
সহকারী মহাব্যবস্থাপক-পূবালী ব্যাংক লিমিটেড
আঞ্চলিক কার্যালয়, মৌলভীবাজার।