ডেস্ক রিপোর্ট : শীত পড়তে না পড়তেই ঘরে ঘরে সর্দি কাশি। দু’টি বছর কোভিড ১৯-এর দাপট সহ্য করার পর এই ডিসেম্বরেই হয়তো প্রথম আবার সাধারণ হাঁচি কাশি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে।
ঠান্ডা লেগে জল ঝরছে নাক থেকে। কিন্তু কেন শীত পড়লেই এই সমস্যা শুরু হয়? কারণ বোধহয় নাক।
নাকের ঠান্ডা লাগে: এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ঠান্ডা বাতাস নাকের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা প্রায় অর্ধেক করে দিতে পারে। তার ফলেই নানা রকম সমস্যা তৈরি হয়।
সংক্রমণ প্রতিরোধে নাকের ভূমিকা: নাক হল প্রবেশ পথ। শ্বাসবায়ুর সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াও শ্বাসযন্ত্রে ঢুকে পড়তে পারে। কিন্তু নাক নিজেই সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। গবেষকরা দেখেছেন, নাকের সামনের অংশটিই এ ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশই আগে জীবাণু সনাক্ত করতে পারে। যত তাড়াতাড়ি এটি একটি অনুপ্রবেশকারী জীবণুকে সনাক্ত করে, তত তাড়াতাড়ি নাকের আস্তরণের কোষগুলি নিজেদের কোটি কোটি সাধারণ প্রতিলিপি তৈরি করতে শুরু করে। এগুলিকে বলে ‘এক্সট্রা-সেলুলার ভেসিকেল’ (ইভি)।
ইভি-র লড়াই: ম্যাসাচুসেটস আই অ্যান্ড ইয়ারের অটোল্যারিঙ্গোলজির ডিরেক্টর এবং বস্টনের হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক, রাইনোলজিস্ট ডঃ বেঞ্জামিন ব্লেয়ার বলেন, ‘ইভিগুলি কোষের মতো বিভক্ত হতে পারে না, তবে এগুলি কোষের ছোট ছোট সংস্করণ তৈরি করে ভাইরাসগুলিকে মেরে ফেলে।’ ফলে আমরা যখনই শ্বাসের সঙ্গে কোনও জীবাণু গ্রহণ করে ফেলি তখন সেই জীবাণুকে আঁকড়ে ধরে ইভি। যাতে তা কোনও কোষের সংস্পর্শে না আসতে পারে।
গবেষকরা দেখেছেন যে কোনও সংক্রমণের সময়, নাক ইভি উৎপাদন ১৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
ঠান্ডা আবহাওয়ায় নাকের সমস্যা: সমীক্ষায় চার অংশগ্রহণকারীকে ১৫ মিনিটের ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রেখে তাঁদের নাসিকা গহ্বরের অবস্থা পরিমাপ করা হয়।
গবেষকদের দাবি, মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখন তাঁর নাকের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। এর ফলে নাকের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় অনেকখানি। গবেষণা বলছে, নাকের ডগায় সামান্য ঠান্ডা লাগলেই প্রায় ৪২ শতাংশ ইভি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
নাক গরম রাখার পদ্ধতি: সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে নাকের ভিতরের পরিবেশ উষ্ণ রাখা ভাইরাসের লড়াই করার অন্যতম শর্ত। শীতের সময় নাক ঢেকে রাখলে ঠান্ডা কম লাগতে পারে। এ জন্য মাস্ক পরা যেতে পারে। সরাসরি জীবাণু নাকে প্রবেশও করতে পারবে না, আবার নাকের উষ্ণতাও বজায় থাকবে।