আফগান মেয়েদের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার অনুমতি

অনলাইন ডেস্ক :

আফগানিস্তানে মেয়েদের প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার অনুমতি দিয়েছে তালেবান কর্তৃপক্ষ। সরকার জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলোতে শর্ত সাপেক্ষে পড়াশোনা করতে পারবে মেয়েরা। তালেবান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্ট পোস্ট এ খবর জানিয়েছে। নারী শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে এ নির্দেশনা দিলো তালেবান। গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে মেয়েদের জন্য পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল ও শিক্ষা কেন্দ্রগুলো উন্মুক্ত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এর সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। শর্তটি হলো, শিক্ষার্থীদের সবাইকে পর্দা করতে হবে। ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ক্ষমতা দখলের পর মেয়েদের জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা নিষিদ্ধ করে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারীশিক্ষা চালু ছিল। তবে নারীদের জন্য পৃথক শ্রেণিকক্ষ ও প্রবেশপথ চালু করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের শুধু নারী শিক্ষক বা বয়স্ক পুরুষ শিক্ষক পড়াতে পারতেন। সবশেষ গত ২০ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ওপর অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয়। সোমবার মেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকছে। সেই সঙ্গে বেশির ভাগ চাকরিতেও নিষিদ্ধ থাকছেন নারীরা। এ ছাড়া আফগানিস্তানে পুরুষ আত্মীয়স্বজন ছাড়া নারীদের একা একা ভ্রমণ নিষিদ্ধ। তারা পার্ক ও শরীরচর্চা কেন্দ্রেও যেতে পারবেন না। ঘরের বাইরে যাওয়ার সময় তাদের পর্দা মেনে চলা বাধ্যতামূলক। সবশেষ নির্দেশনার মধ্যদিয়ে আফগানিস্তানে কার্যত নারীদের শিক্ষার সুযোগ ব্যাপকভাবে সীমিত করা হলো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো তালেবানের এসব বিধিনিষেধের নিন্দা ও সমালোচনা করেছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তালেবানের এ পদক্ষেপকে ‘লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেছে। জি-৭ ভুক্ত দেশ-কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও তালেবানকে সতর্ক করেছেন। একে ‘মানবতাবিরোধী’ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তুরস্ক, কাতার ও পাকিস্তানের মতো বড় বড় মুসলিম দেশগুলোও তালেবান সরকারকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *